শনিবার, ২২ জুন, ২০১৩

যে শালিখ মরে যায় কুয়াশায়: কবি খোন্দকার আশরাফ হোসেন স্মরণ

তুষার গায়েন 

২১ জুন ২০১৩ ৯:৩১ অপরাহ্ন


কবি খোন্দকার আশরাফ হোসেনের মৃত্যু আমাকে যতটা বিষণ্ণ ও শোকাহত করে রেখেছে তার অধিক আচ্ছন্ন হয়ে আছি এক ছটফট করা অস্থিরতায়। সেটা যে তাঁর সাথে দীর্ঘকালের কাব্যসম্পর্ক বা ব্যক্তিগত ভালোমন্দের ঘনিষ্ঠতাই কারণ তা নয়; বরং একজন সৃষ্টিশীল, কর্মিষ্ঠ মানুষের অকাল প্রস্থানে প্রকৃতির কোথাও যেন প্রতিকারহীন এক অন্যায় সংঘটিত হয়েছে ভেবে আমার মন কোনোভাবেই তা মানতে চাইছে না। এখন আরো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে তাঁর অকালমৃত্যু শুধু অদৃশ্য প্রকৃতির ইশারায় নয়, বরং মনুষ্য চিকিৎসকের অবহেলাও দৃশ্যমান, দণ্ডযোগ্য কারণ। জীবনের সমান চুমুকে যার প্রত্যয় ও অধিকার, তিনি কেন তৃষ্ণার্ত থেকে অকালে বিদায় নেবেন এবং আমাদের রেখে যাবেন নিদারুণ আফসোসে!

খোন্দকার আশরাফ হোসেন : কবি ও শিক্ষক

    জুনাইদুল হক
খোন্দকার আশরাফ হোসেন : কবি ও শিক্ষক
খোন্দকার আশরাফ হোসেন হঠাত্ করেই গত রোববার দুপুরে চলে গেলেন। স্ট্রোক-এ মারা যান তিনি। শোকের ছায়া নেমে আসে তার পরিবার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ত্রিশাল জাতীয় কবি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়, কবি ও ছোটকাগজ কর্মীদের মধ্যে। বয়স তেষট্টি হলেও চল্লিশ বছরের যুবকের মতোই চলাফেরা করতেন তিনি। এত তাড়াতাড়ি তিনি চলে যাবেন, আমাদের কারও ধারণায় তা ছিল না।

ছন্দময় জীবনের উজ্জ্বল গান

ইকবাল আজিজ

সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিতভাবে চলে গেলেন আশির দশকের উজ্জ্বল কবি ও প্রবন্ধকার খন্দকার আশরাফ হোসেন। তিনি একজন আধুনিক, সুশিক্ষিত ও প্রাণবন্যায় চঞ্চল কাব্যনির্মাতা। খন্দকার আশরাফ হোসেন এত তাড়াতাড়ি চলে যাবেন কেউই ভাবেনি। যখনই দেখা হয়েছে তাঁর মধ্যে এক অদ্ভুত প্রাণচাঞ্চল্য লক্ষ্য করেছি। সব সময় লক্ষ্য করেছি, তিনি অনেকের মাঝে একা, সৃষ্টিসুখের উল্লাসে সর্বদা অস্থির পদক্ষেপে হেঁটে গেছেন। খন্দকার আশরাফ হোসেন তাঁর বয়সী কবি সাহিত্যিকদের তুলনায় একটু বেশি বয়সে সাহিত্যজগতে পদার্পণ করেছিলেন। বয়সের দিক দিয়ে ছিলেন ষাট দশকের কবি মুহম্মদ নূরুল হুদার সমান বয়সী ও তাঁর সহপাঠী।

কবিতার অন্তর্যামী

খোন্দকার আশরাফ হোসেনের প্রবন্ধ


কবিতা যে অন্য কোনো কলার হাতিয়ার নয়, বরং স্বয়ংসম্পূর্ণ ও স্বরাট, এ কথাটি প্রতিষ্ঠ হতে অনেক সময় নিয়েছে। কবিতা নৈতিক শিক্ষা, সমাজবদলের হাতিয়ার হিসিবে ব্যবহূত হয়েছে উপযোগবাদীদের হাতে। কবিতাকে চেতনায় শান দেওয়ার পাথরখণ্ডও ভাবা হয়েছে। কিন্তু এসবই কবিতার দ্বৈতীয়িক ব্যবহার :কবিতা তার অর্থের জন্য তার বাইরের কোনো প্রসঙ্গের ওপর নির্বরশীল নয়; সে স্বয়ংক্রিয় ও স্বায়ত্তশাসিত; তার রেফারেন্স তার নিজের ভেতরেরই বলয়িত বলে একটি কবিতা কখন, কোন সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে রচিত হয়েছে তা, এমনকি কবির সে সময়কার মানস-অবস্থাও, বাহ্য :অনুসন্ধিত্সু ব্যক্তি কোনো সুন্দরীর গয়না কোন জুয়েলারিতে তৈরি হয়, তার শুভ্রদন্তবিকাশ হাসির পেছনে কোন মাজনের কারিগরি, সেসব নিয়ে গবেষণা করলে করুন, রূপতাপসের জন্য তার কোনো প্রয়োজন পড়ে না

অহঙ্কার যেখানে অলঙ্কার :


বী রে ন মু খা র্জী
ভোরের কাগজ : শুক্রবার, ২১ জুন ২০১৩

‘নির্মোহ যুক্তিবাদ’ এর সুস্পষ্ট প্রভাব মেলে কবি খোন্দকার আশরাফ হোসেনের কবিতায়। ব্যক্তি জীবনে তিনি যেমন নির্মোহ-স্বভাবী তেমনি তার কবিতায় ছড়িয়ে রয়েছে ব্যক্তিক চিন্তার নানামাত্রিক ব্যাখ্যা। কবিতায় ধারণ করেছেন যাপিত জীবনের অলঙ্ঘনীয় সত্যরূপটি। কবির এক কিংবা দুই পঙ্ক্তির ‘কুয়াশার মুশায়েরা’ থেকে শুরু করে অধিকাংশ কবিতা পাঠে এমন সত্যই সন্ধানী পাঠকের সামনে উন্মোচিত হয়।

প্রকৃত কবির বিদায়

ডঃ তপন বাগচী

কবি খোন্দকার আশরাফ হোসেনের সঙ্গে আমার পরিচয় আমার দীর্ঘদিনের। ঢাকা এসেই তাঁর কবিতার সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে। তারপর ফরিদপুর সাহিত্য ও সংস্কৃতি উন্নয়ন সংস্থার আলাওল সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৭) পাওয়ার পরে সরাসরি পরিচয়। সেই থেকে ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠতা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে মফঃস্বলের কবিতাক্রান্ত তরুণের চোখে কবি দেখার আনন্দ নিয়ে ঘোরা-ফেরা।

কবির বিদায় অথবা পুনর্জন্ম

k I K Z †nv ‡m b

†fv‡ii KvMR : ïµevi, 21 Ryb 2013

Kwe †Lv›`Kvi Avkivd †nv‡mb 16 Ryb `ycy‡ii w`‡K wPiwe`vq †bb Avgv‡`i KvQ †_‡K| †K K‡e we`vq †b‡eb †mUv Avgiv †KD-B Rvwb bv; Avevi mevB‡K we`vq wb‡Z n‡eÑ GwU Rxe‡bi GKwU iæwUb-KvR| †Lv›`Kv‡ii GB we`vqI ZvB Awba©vwiZ A_P iæwUbgvwdK we`vq| Kwei Rb¨ GwU †hgb we`vq, GKBfv‡e Zuvi cybR©b¥I e‡U|

খোন্দকার আশরাফ হোসেন : মরণ এমন দেশ, যার ধূম্র আলিঙ্গন থেকে ফেরে না পথিক কোনো

খোন্দকার আশরাফ হোসেনমরণ এমন দেশ, যার ধূম্র আলিঙ্গন থেকে ফেরে না পথিক কোনোখালেদ হোসাইন


ঠিক দুপুর ১২টা ৩৫-এ ফোনটা এলো। করেছে বন্ধু মাহবুব, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান। বলল, 'একটু আগে আশরাফ স্যার মারা গেছেন।' বুঝতে অসুবিধে হলো। আমার সামনে বসা তখন অনিরুদ্ধ কাহালি আর সুমন সাজ্জাদ। আমার মুখাবয়বে নিশ্চয় বদল ঘটেছিল। ওরাও কিছু বুঝতে চাইল। আমি নিশ্চিত হওয়ার জন্য জানতে চাইলাম, 'কে? কখন? কিভাবে?

বাড়ি যাবো, বাড়ি

খোন্দকার আশরাফ হোসেন-এর কবিতাবাড়ি যাবো, বাড়ি


---------------------------------------------------------খোন্দকার আশরাফ হোসেন জন্ম : ১৩২৫/২৫ খ্রিস্টাব্দ, মৃত্যু : ১৩৮৯/১৩৯০ খ্রিস্টাব্দ---------------------------------------------------------













বাড়ি যাবো, বাড়ি যাবো, বাড়ি...
পথ ছাড়ো অন্ধকার, পথ ছাড়ো দূরত্বের দূরগামী পথ
বাড়ি যাবো, বাড়ি...

খোন্দকার আশরাফ হোসেন কবির মৃত্যু নেই

যে জীবনের পরিমাপ সাফল্য বা ব্যর্থতার তুলাদণ্ডের বদলে ওজন করতে হবে বোধের সংবেদনশীলতায়। তার কবিতা পাঠের স্পর্শকাতর অনুভূতিতে জারিত হয়ে আমাদের অবিন্যস্ত কাব্য-ইতিহাসের উদভ্রান্ত দিগন্তে তাকে দেখা যাবে সুউচ্চতায়। খোন্দকার আশরাফ হোসেনকে নিয়ে স্মৃতির রহস্যময় খেলাটি কোন নিয়মে চলবে জানি না। ভবিষ্যৎ তাকে কোন ব্যক্তিত্ব কাঠামোয় বাধবে, সেটাও আমাদের অজানা। কিন্তু যা নিশ্চিতভাবে জানা, তা হলো, অতীত বা বর্তমানের মতো, তিনি আর কবিতা সমান্তরালে হাত ধরাধরি করে চলবে ভবিষ্যতের পথে।