শনিবার, ২২ জুন, ২০১৩

যে শালিখ মরে যায় কুয়াশায়: কবি খোন্দকার আশরাফ হোসেন স্মরণ

তুষার গায়েন 

২১ জুন ২০১৩ ৯:৩১ অপরাহ্ন


কবি খোন্দকার আশরাফ হোসেনের মৃত্যু আমাকে যতটা বিষণ্ণ ও শোকাহত করে রেখেছে তার অধিক আচ্ছন্ন হয়ে আছি এক ছটফট করা অস্থিরতায়। সেটা যে তাঁর সাথে দীর্ঘকালের কাব্যসম্পর্ক বা ব্যক্তিগত ভালোমন্দের ঘনিষ্ঠতাই কারণ তা নয়; বরং একজন সৃষ্টিশীল, কর্মিষ্ঠ মানুষের অকাল প্রস্থানে প্রকৃতির কোথাও যেন প্রতিকারহীন এক অন্যায় সংঘটিত হয়েছে ভেবে আমার মন কোনোভাবেই তা মানতে চাইছে না। এখন আরো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে তাঁর অকালমৃত্যু শুধু অদৃশ্য প্রকৃতির ইশারায় নয়, বরং মনুষ্য চিকিৎসকের অবহেলাও দৃশ্যমান, দণ্ডযোগ্য কারণ। জীবনের সমান চুমুকে যার প্রত্যয় ও অধিকার, তিনি কেন তৃষ্ণার্ত থেকে অকালে বিদায় নেবেন এবং আমাদের রেখে যাবেন নিদারুণ আফসোসে!

খোন্দকার আশরাফ হোসেন : কবি ও শিক্ষক

    জুনাইদুল হক
খোন্দকার আশরাফ হোসেন : কবি ও শিক্ষক
খোন্দকার আশরাফ হোসেন হঠাত্ করেই গত রোববার দুপুরে চলে গেলেন। স্ট্রোক-এ মারা যান তিনি। শোকের ছায়া নেমে আসে তার পরিবার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ত্রিশাল জাতীয় কবি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়, কবি ও ছোটকাগজ কর্মীদের মধ্যে। বয়স তেষট্টি হলেও চল্লিশ বছরের যুবকের মতোই চলাফেরা করতেন তিনি। এত তাড়াতাড়ি তিনি চলে যাবেন, আমাদের কারও ধারণায় তা ছিল না।

ছন্দময় জীবনের উজ্জ্বল গান

ইকবাল আজিজ

সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিতভাবে চলে গেলেন আশির দশকের উজ্জ্বল কবি ও প্রবন্ধকার খন্দকার আশরাফ হোসেন। তিনি একজন আধুনিক, সুশিক্ষিত ও প্রাণবন্যায় চঞ্চল কাব্যনির্মাতা। খন্দকার আশরাফ হোসেন এত তাড়াতাড়ি চলে যাবেন কেউই ভাবেনি। যখনই দেখা হয়েছে তাঁর মধ্যে এক অদ্ভুত প্রাণচাঞ্চল্য লক্ষ্য করেছি। সব সময় লক্ষ্য করেছি, তিনি অনেকের মাঝে একা, সৃষ্টিসুখের উল্লাসে সর্বদা অস্থির পদক্ষেপে হেঁটে গেছেন। খন্দকার আশরাফ হোসেন তাঁর বয়সী কবি সাহিত্যিকদের তুলনায় একটু বেশি বয়সে সাহিত্যজগতে পদার্পণ করেছিলেন। বয়সের দিক দিয়ে ছিলেন ষাট দশকের কবি মুহম্মদ নূরুল হুদার সমান বয়সী ও তাঁর সহপাঠী।

কবিতার অন্তর্যামী

খোন্দকার আশরাফ হোসেনের প্রবন্ধ


কবিতা যে অন্য কোনো কলার হাতিয়ার নয়, বরং স্বয়ংসম্পূর্ণ ও স্বরাট, এ কথাটি প্রতিষ্ঠ হতে অনেক সময় নিয়েছে। কবিতা নৈতিক শিক্ষা, সমাজবদলের হাতিয়ার হিসিবে ব্যবহূত হয়েছে উপযোগবাদীদের হাতে। কবিতাকে চেতনায় শান দেওয়ার পাথরখণ্ডও ভাবা হয়েছে। কিন্তু এসবই কবিতার দ্বৈতীয়িক ব্যবহার :কবিতা তার অর্থের জন্য তার বাইরের কোনো প্রসঙ্গের ওপর নির্বরশীল নয়; সে স্বয়ংক্রিয় ও স্বায়ত্তশাসিত; তার রেফারেন্স তার নিজের ভেতরেরই বলয়িত বলে একটি কবিতা কখন, কোন সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে রচিত হয়েছে তা, এমনকি কবির সে সময়কার মানস-অবস্থাও, বাহ্য :অনুসন্ধিত্সু ব্যক্তি কোনো সুন্দরীর গয়না কোন জুয়েলারিতে তৈরি হয়, তার শুভ্রদন্তবিকাশ হাসির পেছনে কোন মাজনের কারিগরি, সেসব নিয়ে গবেষণা করলে করুন, রূপতাপসের জন্য তার কোনো প্রয়োজন পড়ে না

অহঙ্কার যেখানে অলঙ্কার :


বী রে ন মু খা র্জী
ভোরের কাগজ : শুক্রবার, ২১ জুন ২০১৩

‘নির্মোহ যুক্তিবাদ’ এর সুস্পষ্ট প্রভাব মেলে কবি খোন্দকার আশরাফ হোসেনের কবিতায়। ব্যক্তি জীবনে তিনি যেমন নির্মোহ-স্বভাবী তেমনি তার কবিতায় ছড়িয়ে রয়েছে ব্যক্তিক চিন্তার নানামাত্রিক ব্যাখ্যা। কবিতায় ধারণ করেছেন যাপিত জীবনের অলঙ্ঘনীয় সত্যরূপটি। কবির এক কিংবা দুই পঙ্ক্তির ‘কুয়াশার মুশায়েরা’ থেকে শুরু করে অধিকাংশ কবিতা পাঠে এমন সত্যই সন্ধানী পাঠকের সামনে উন্মোচিত হয়।

প্রকৃত কবির বিদায়

ডঃ তপন বাগচী

কবি খোন্দকার আশরাফ হোসেনের সঙ্গে আমার পরিচয় আমার দীর্ঘদিনের। ঢাকা এসেই তাঁর কবিতার সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে। তারপর ফরিদপুর সাহিত্য ও সংস্কৃতি উন্নয়ন সংস্থার আলাওল সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৭) পাওয়ার পরে সরাসরি পরিচয়। সেই থেকে ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠতা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে মফঃস্বলের কবিতাক্রান্ত তরুণের চোখে কবি দেখার আনন্দ নিয়ে ঘোরা-ফেরা।

কবির বিদায় অথবা পুনর্জন্ম

k I K Z †nv ‡m b

†fv‡ii KvMR : ïµevi, 21 Ryb 2013

Kwe †Lv›`Kvi Avkivd †nv‡mb 16 Ryb `ycy‡ii w`‡K wPiwe`vq †bb Avgv‡`i KvQ †_‡K| †K K‡e we`vq †b‡eb †mUv Avgiv †KD-B Rvwb bv; Avevi mevB‡K we`vq wb‡Z n‡eÑ GwU Rxe‡bi GKwU iæwUb-KvR| †Lv›`Kv‡ii GB we`vqI ZvB Awba©vwiZ A_P iæwUbgvwdK we`vq| Kwei Rb¨ GwU †hgb we`vq, GKBfv‡e Zuvi cybR©b¥I e‡U|

খোন্দকার আশরাফ হোসেন : মরণ এমন দেশ, যার ধূম্র আলিঙ্গন থেকে ফেরে না পথিক কোনো

খোন্দকার আশরাফ হোসেনমরণ এমন দেশ, যার ধূম্র আলিঙ্গন থেকে ফেরে না পথিক কোনোখালেদ হোসাইন


ঠিক দুপুর ১২টা ৩৫-এ ফোনটা এলো। করেছে বন্ধু মাহবুব, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান। বলল, 'একটু আগে আশরাফ স্যার মারা গেছেন।' বুঝতে অসুবিধে হলো। আমার সামনে বসা তখন অনিরুদ্ধ কাহালি আর সুমন সাজ্জাদ। আমার মুখাবয়বে নিশ্চয় বদল ঘটেছিল। ওরাও কিছু বুঝতে চাইল। আমি নিশ্চিত হওয়ার জন্য জানতে চাইলাম, 'কে? কখন? কিভাবে?

বাড়ি যাবো, বাড়ি

খোন্দকার আশরাফ হোসেন-এর কবিতাবাড়ি যাবো, বাড়ি


---------------------------------------------------------খোন্দকার আশরাফ হোসেন জন্ম : ১৩২৫/২৫ খ্রিস্টাব্দ, মৃত্যু : ১৩৮৯/১৩৯০ খ্রিস্টাব্দ---------------------------------------------------------













বাড়ি যাবো, বাড়ি যাবো, বাড়ি...
পথ ছাড়ো অন্ধকার, পথ ছাড়ো দূরত্বের দূরগামী পথ
বাড়ি যাবো, বাড়ি...

খোন্দকার আশরাফ হোসেন কবির মৃত্যু নেই

যে জীবনের পরিমাপ সাফল্য বা ব্যর্থতার তুলাদণ্ডের বদলে ওজন করতে হবে বোধের সংবেদনশীলতায়। তার কবিতা পাঠের স্পর্শকাতর অনুভূতিতে জারিত হয়ে আমাদের অবিন্যস্ত কাব্য-ইতিহাসের উদভ্রান্ত দিগন্তে তাকে দেখা যাবে সুউচ্চতায়। খোন্দকার আশরাফ হোসেনকে নিয়ে স্মৃতির রহস্যময় খেলাটি কোন নিয়মে চলবে জানি না। ভবিষ্যৎ তাকে কোন ব্যক্তিত্ব কাঠামোয় বাধবে, সেটাও আমাদের অজানা। কিন্তু যা নিশ্চিতভাবে জানা, তা হলো, অতীত বা বর্তমানের মতো, তিনি আর কবিতা সমান্তরালে হাত ধরাধরি করে চলবে ভবিষ্যতের পথে।

বিদায় কবিতার পার্থ

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম | 

খোন্দকার আশরাফ হোসেন
খোন্দকার আশরাফ হোসেন

প্রস্তুতিবিহীন যাত্রা

                                                      মুহম্মদ নূরুল হুদা
অনেকটা প্রস্তুতিবিহীনভাবে চলে গেল আমার বন্ধু খোন্দকার আশরাফ হোসেন। আমাদের কালের প্রায়-অশনাক্ত এক কাব্যনায়ক। আমার সহপাঠী ও বহুমাত্রিক এক সৃষ্টিযাত্রী। আজ থেকে প্রায় অর্ধ-শতাব্দী আগে তার সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে।

বুধবার, ১৯ জুন, ২০১৩

আশরাফ স্যার, আমরা অপেক্ষায় আছি

দ্রাবিরা আঞ্জুমান হুদা | ১৯ জুন ২০১৩ ২:০৭ অপরাহ্


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে পড়ার সুযোগ পাওয়ার পরপরই আমার বাবা আমাকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন খোন্দকার আশরাফ হোসেন স্যারের সাথে। কলাভবনে টিচার্স লাউঞ্জে বসে থাকা বাবরি চুলের দীর্ঘকায় মানুষটির আকর্ষণীয় বাচনভঙ্গীর কথা ততদিনে আমি বহুবার শুনে ফেলেছি একই বিভাগ থেকে পাশ করে যাওয়া আমার বড় আপুদের কাছ থেকে। সেদিন স্যারের সামনে বসে মুগ্ধ হয়ে স্যারের কথা শুনেছিলাম আর ভেবেছিলাম কবে তার ক্লাস পাবো! পেলাম ২য় বর্ষে উঠে। সেমিস্টারের যাঁতাকল সত্ত্বেও romantic poetry কোর্সটি স্যার পড়ালেন চমৎকার!!

খোন্দকার আশরাফ হোসেনঃ জীবনের সমান কবি

কামরুল হাসান | ১৮ জুন ২০১৩ ৩:২১ অপরাহ্ন


সকলকে বিমূঢ় ও শোকস্তব্ধ করে ১৬ জুন রোববার সকালে নিরালোকে চলে গেলেন কবি খোন্দকার আশরাফ হোসেন। প্রথমটায় মনে হল ভুল শুনেছি, বিশ্বাস হয়নি, কেননা তাঁর যাওয়ার সময় হয়নি, কত কাজ পড়ে ছিল সৃষ্টিশীল দু’হাতে, সেসব ছেড়ে কী করে চলে যান তিনি? তাঁর মৃত্যু এত অপ্রত্যাশিত যে কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে বসেছিলাম, চোখ ভরে উঠছিল জলে, আর মনে পড়ছিল তাঁর সাথে কাটানো অসংখ্য স্মৃতিময় দিনের কথা। কী প্রাণবান মানুষ ছিলেন শক্তিমান এ কবি!

সোমবার, ১৭ জুন, ২০১৩

কবির মৃত্যু









জাহেদ আহমদ

চলে গেলেন খোন্দকার আশরাফ হোসেন! অকালে, এত অকস্মাৎ, এই চলে-যাওয়া। তাঁর প্রস্থানদৃশ্য কোনোপ্রকার নাটকীয়তাহীন, অতি নিভৃতে, সম্ভবত খুব-কেউ জানতেনও না টানা-দুইদিন তিনি হাসপাতালায়িত ছিলেন। সম্ভবত, কেননা আজকাল তো তরুণতর কবি যিনি কিনা কাব্য-লিখিবেন-বলিয়া-ঠিক-করিয়াছেন-কিন্তু-লিখিয়া-উঠিতে-পারেন-নাই-এখনও-সময়াভাবে এমনদেরকেও যখন দেখি খুকখুকে কাশি হলেও খবর হয়ে বিরাজেন মিডিয়ায়---ফেসবুকে হোক বা বান্ধবদোস্তের ব্লগস্পটে---সেখানে খোন্দকারের রোগসংবাদ বা তাঁর তবিয়তের ফিলহাল স্ট্যাটাস জানতে পেলে কেউ কেউ অন্তত যারা কবিসাহিত্যিক না, যারা আমার মতো কবিতার ভোলাভালা পাঠক কেবল, তারা আরোগ্যাশীর্বাদ করতেন মনে মনে এবং প্রকাশ্য কমেন্ট পোস্ট করে। অথবা আর-কিছু পারি না-পারি, মৃত্যুশয্যায় একজন কবি অমুক---এহেন সংবাদে একটা লাইক তো দিবার পারতাম!!!

খোন্দকার আশরাফ হোসেনের ৫টি কবিতা











পরিচয় শুরু হলো পাউল সেলানের অনুবাদ দিয়ে

কতবার জাহান্নামের আগুনে পোড়াতে চেয়েছ আমাকে
কতবার বুরুজ পর্বত থেকে ঝুলিয়ে রেখেছ
তোমার তরবারি
কত দিন ক্ষুধার্ত উদর নিয়ে কেঁদে কেঁদে
রাত করেছি কাবার

কবি খোন্দকার আশরাফ হোসেন: মৃত্যূত্তোর শ্রদ্ধা


আহমাদ মাযহার |
১৭ জুন ২০১৩ ২:০৪ অপরাহ্ন

খোন্দকার আশরাফ হেসেনের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়েছিল গত শতাব্দীর আশির দশকের প্রথম ভাগে, সম্ভবত ১৯৮৩ সালে, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে। সম্ভবত যে বলছি তার কারণ তখন আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাকিম চত্বরে, বাংলা একাডেমীতে কবি ওবায়দুল ইসলামের আড্ডায়, শিল্পকলা একাডেমীতে কবি অল মাহমুদের কক্ষে, নিউ মার্কেটের বইয়ের দোকান নলেজ হোমে, স্টেডিয়ামের বইয়ের দোকান ম্যারিয়েটায়, ভারতীয় তথ্যকেন্দ্র লাইব্রেরিতে, জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্রে কবি কায়সুল হকের কক্ষে, দৈনিক বাংলায় আফলাতুন বা কবি আহসান হাবীবের সম্পাদকীয় দপ্তরে প্রচুর ঘোরাঘুরি করতাম। এইসব জায়গার কোথাও তাঁর সঙ্গে দেখা হয়ে থাকতে পারে। তবে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের আমতলায় সমবয়সী আমরা যারা আড্ডা দিতাম তাদের মাঝেই ভিড়ে গিয়েছিলেন তিনি। তখন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বা সহযোগী অধ্যাপক। তখনই শুনেছি যুক্তরাজ্য থেকে বৃত্তি নিয়ে কোনো একটা বিষয়ে স্নাতকোত্তর করে দেশে ফিরেছেন।

রবিবার, ১৬ জুন, ২০১৩

‘পৃথিবীর সর্বশেষ কবি’ খোন্দকার আশরাফ হোসেন

মুক্তিযোদ্ধা, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও অনুবাদক খোন্দকার আশরাফ হোসেনের আরও দুটি উল্লেখযোগ্য পরিচয় হলো তিনি ছিলেন শিক্ষক এবং একটি সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক। কিন্তু এতসব পরিচয়ের মধ্যে যে পরিচয়টি সবচেয়ে বেশি উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে সেটা তার কবি পরিচয়। তিনি নিজেও এই পরিচয়টিতে বেশি গৌরববোধ করতেন।

টি. এস. এলিয়টের The Lovesong of J. Alfred Prufrock-এর অনুবাদ


খোন্দকার আশরাফ হোসেন | 

ইংরেজি কবিতায় আধুনিকবাদের জনক টি. এস. এলিয়ট (T. S. Eliot)। যে-কবিতাটি তাঁকে প্রথম বিশ্বখ্যাতি এনে দেয় তাঁর নাম The Lovesong of J. Alfred Prufrock’                           . আমেরিকায়-জন্ম-নেয়া এলিয়ট প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানি-ফেরতা হয়ে ইংল্যান্ডে আসেন। লন্ডনে তখন মোটামুটি আসর জাঁকিয়ে বসেছেন আরেক প্রখ্যাত মার্কিনি কবি, এলিয়টের চেয়ে বয়সে বড়, এজরা পাউন্ড।

কবি খোন্দকার আশরাফ হোসেনের জীবনপঞ্জী












জন্ম : ৪ জানুয়ারি ১৯৫০। জয়নগরসরিষাবাড়িজামালপুর
ইংরেজি সাহিত্যে অনার্সইংরেজি বিভাগঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
এম.এ. ইংরেজি সাহিত্যঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
পোস্টগ্রাজুয়েট ডিপ্লোমালীডস বিশ্ববিদ্যালয়যুক্তরাজ্য
এম. এ. (ভাষাতত্ত্ব ও ধ্বনিতত্ত্ব)লীডস বিশ্ববিদ্যালয়যুক্তরাজ্য
পিএইচ. ডি. (ইংরেজি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
পেশা : অধ্যাপনাইংরেজি বিভাগঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৭৩ থেকে অদ্যাবধি)
উপাচার্য : জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়।
মৃত্যু : ১৬ জুন ২০১৩।

খোন্দকার আশরাফ হোসেন : তোমার নামে বৃষ্টি নামে


এহ্‌সান মাহ্‌মুদ

১৯৫০ থেকে ২০১৩, ক্যালেন্ডারের হিসেবে ৬৩ বছর। বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ুর হিসেবে একেবারেই উপেক্ষা করার মতো নয়। যে বয়সের কারো সামনে দাঁড়ালে বেশ সমীহ করে দাঁড়াতে হয়। বয়সের কারনে হোক আর অভিজ্ঞতার কারনেই হোক, মাথা নিচু হয়ে আসে তাঁদের সামনে দাঁড়ালে। বয়স আর অভিজ্ঞতা ছাড়াও আরো একটি কারনে কারো সামনে দাঁড়ালে মাথা নিচু হয়ে আসে, সেটি হলো বিনয়। কারো বিনয়ী আচরণ। তবে বয়স, অভিজ্ঞতা, বিনয় এই তিনটি গুণাবলী এক জীবনে একজন মানুষের চরিত্রে ধারন করাটা একটু দূরহ কাজই বটে। 

খোন্দকার আশরাফ হোসেনের প্রয়ানে ফেসবুকে শোক-লেখা


জাকির তালুকদার--
আমাদের ভাষার অত্যন্ত প্রয়োজনীয় কবি খোন্দকার আশরাফ হোসেন আজ মারা গেলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করেছেন। মাত্র কয়েকমাস আগে ত্রিশাল কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হয়েছিলেন। মুল পরিচয় কবি, এবং গুরুত্বপূর্ণ কবিতাপত্রিকা 'একবিংশ'-এর সম্পাদক। 
তাঁর সাথে আমার ঘনিষ্ঠতা বা সখ্য তেমন ছিল না। দেখা হলে শুভেচ্ছা বিনিময় করতাম। তাঁর পত্রিকায় আমি একটিমাত্র কবিতা লিখেছিলাম।

খোন্দকার আশরাফ হোসেনের সাক্ষাতকার--আমাদের সমাজটা আসলে বন্দি


খোন্দকার আশরাফ হোসেন (১৯৫০-২০১৩) কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক, অনুবাদক। তিনি ১৯৫০ সালের ৪ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। ছাত্রাবস্থাতেই তিনি লেখালেখির সংগে জড়িয়ে পড়েন। তাঁর এ যাবত প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ তিন রমণীর ক্বাসিদা, পার্থ তোমার তীব্র তীর, জীবনের সমান চুমুক, সুন্দরী ও ঘৃণার ঘুঙুর, জন্মবাউল, যমুনাপর্ব এবং আয়না দেখে অন্ধ মানুষ

কবিতা সম্পর্কে আমি আশাবাদী : কবি খোন্দকার আশরাফ হোসেন

সাক্ষাৎকার গ্রহণে--
আনিস আহমেদ
21.03.2013
জাতিসংঘের উদ্যোগে গোটা বিশ্বে আন্তর্জাতিক কবিতা দিবস উদযাপিত হলো একুশে মার্চ । আমাদের এই প্রাত্যহিক , প্রায় প্রাযৌক্তিক পৃথিবীতে কবিতার অপরিহার্যতাই বা কি ? এসব বিষয় নিয়ে , ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ও কবি ড খোন্দকার আশরাফ হোসেন কথা বলেছেন ভয়েস অফ আমেরিকার সঙ্গে। তিনি বলেন যে সাহিত্যের অধ্যাপক হওয়া এবং কবিতা  লেখার সৃজনশীলতার মধ্যে কোন বিরোধ নেই। তিনি মনে করেন যে ক্লাসরুমে কবিতা পড়ানোর বিষয়টি ঠিক কবিতার ব্যবচ্ছেদ নয় , কবিতা পাঠ । প্রসঙ্গত তিনি বেশ কয়েকজন কবির কথা উল্লেখ করেন , যারা  সৃজনশীলতার সঙ্গে কবিতা নিয়ে বিশ্লেষানত্মক নিবন্ধ লিখেছেন বিস্তর।  অতএব তাঁর এই পাঠদানের সঙ্গে তাঁর সৃজনশীল কর্মকান্ডের কোন বিরোধ বা দ্বন্দ্ব নেই বলে খোন্দকার আশরাফ মনে করেন।

তারুণ্যের খাপে চাই সতর্ক দু’টি ছুরি : খোন্দকার আশরাফ হোসেন



[ কবি খোন্দকার আশরাফ হোসেন আশির দশকের অন্যতম কবি। সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেছেন  ফারহান ইশরাক । লিঙ্ক ]

ইশরাক: প্রস্তুতিপর্বে, কবিতার পেয়ালায় ঢেলে দর্শনের যে নির্যাস আপনাকে পান করতে দেখি পরবর্তী পর্যায়ে তৃষ্ণার সে চুমুক থেকে মুখ ফিরিয়ে সমাজচেতনার আশ্রয়ে দাঁড়িয়ে আপনাকে বাজাতে শুনি সমকালীনতার শেষাত্মক বাঁশি, যদিও তা নন্দনের আবশ্যিক শর্তকে আদৌ ব্যাহত করে না। এর অন্তরালে  কাজ করেছে চেতনার কোন বিশেষ প্রতারক-খোলস পাল্টানো সমাজবিকৃতির অভিঘাত, নাকি মনস্তত্ত্বের স্বতঃস্ফূর্ত রূপান্তর?

খোন্দকার আশরাফ হোসেনের ১৫টি কবিতা








১৬ জুন খোন্দকার আশরাফ হোসেন ১৬ জুন চলে গেলেন না ফেরার দেশে। তাঁর লেখা নির্বাচিত ১৫টি কবিতা প্রকাশ করা হল। কবিতাগুলো তিনি বিভিন্ন সময়ে কুলদা রায়কে পাঠিয়েছিলেন। 

প্রার্থনায় নম্র হও পাবে

আমাকে পাবে না প্রেমেপ্রার্থনায় নম্র হও পাবে,
কামে-ঘামে আমি নেইপিপাসায় তপ্ত হও পাবে

পাখিরা প্রমত্ত হলে সঙ্গিনীকে ডেকে নেয় দেহের ছায়ায়-
ছায়া নয়রৌদ্রতাপ জ্বালাবার শক্তি ধরোকেবল আমাকে
তপ্তজলে দগ্ধ করোরুদ্ধ ক্রোধে দীপ্ত করোপাবে

পৃথিবীর সর্বশেষ কবি আমি অহঙ্কার আমার কবিতা
বিষাদে বিশ্বাসে পূর্ণ হৃদয়ের জলাধারে ধরো,
আমাতে নিবদ্ধ হও পূর্ণপ্রাণ ফলবন্ত হও-
আমাকে পাবে না ফলেপরাগ-নিষিক্ত হওপাবে