সোমবার, ১৭ জুন, ২০১৩

কবি খোন্দকার আশরাফ হোসেন: মৃত্যূত্তোর শ্রদ্ধা


আহমাদ মাযহার |
১৭ জুন ২০১৩ ২:০৪ অপরাহ্ন

খোন্দকার আশরাফ হেসেনের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়েছিল গত শতাব্দীর আশির দশকের প্রথম ভাগে, সম্ভবত ১৯৮৩ সালে, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে। সম্ভবত যে বলছি তার কারণ তখন আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাকিম চত্বরে, বাংলা একাডেমীতে কবি ওবায়দুল ইসলামের আড্ডায়, শিল্পকলা একাডেমীতে কবি অল মাহমুদের কক্ষে, নিউ মার্কেটের বইয়ের দোকান নলেজ হোমে, স্টেডিয়ামের বইয়ের দোকান ম্যারিয়েটায়, ভারতীয় তথ্যকেন্দ্র লাইব্রেরিতে, জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্রে কবি কায়সুল হকের কক্ষে, দৈনিক বাংলায় আফলাতুন বা কবি আহসান হাবীবের সম্পাদকীয় দপ্তরে প্রচুর ঘোরাঘুরি করতাম। এইসব জায়গার কোথাও তাঁর সঙ্গে দেখা হয়ে থাকতে পারে। তবে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের আমতলায় সমবয়সী আমরা যারা আড্ডা দিতাম তাদের মাঝেই ভিড়ে গিয়েছিলেন তিনি। তখন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বা সহযোগী অধ্যাপক। তখনই শুনেছি যুক্তরাজ্য থেকে বৃত্তি নিয়ে কোনো একটা বিষয়ে স্নাতকোত্তর করে দেশে ফিরেছেন।

রবিবার, ১৬ জুন, ২০১৩

‘পৃথিবীর সর্বশেষ কবি’ খোন্দকার আশরাফ হোসেন

মুক্তিযোদ্ধা, কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও অনুবাদক খোন্দকার আশরাফ হোসেনের আরও দুটি উল্লেখযোগ্য পরিচয় হলো তিনি ছিলেন শিক্ষক এবং একটি সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক। কিন্তু এতসব পরিচয়ের মধ্যে যে পরিচয়টি সবচেয়ে বেশি উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে সেটা তার কবি পরিচয়। তিনি নিজেও এই পরিচয়টিতে বেশি গৌরববোধ করতেন।

টি. এস. এলিয়টের The Lovesong of J. Alfred Prufrock-এর অনুবাদ


খোন্দকার আশরাফ হোসেন | 

ইংরেজি কবিতায় আধুনিকবাদের জনক টি. এস. এলিয়ট (T. S. Eliot)। যে-কবিতাটি তাঁকে প্রথম বিশ্বখ্যাতি এনে দেয় তাঁর নাম The Lovesong of J. Alfred Prufrock’                           . আমেরিকায়-জন্ম-নেয়া এলিয়ট প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানি-ফেরতা হয়ে ইংল্যান্ডে আসেন। লন্ডনে তখন মোটামুটি আসর জাঁকিয়ে বসেছেন আরেক প্রখ্যাত মার্কিনি কবি, এলিয়টের চেয়ে বয়সে বড়, এজরা পাউন্ড।

কবি খোন্দকার আশরাফ হোসেনের জীবনপঞ্জী












জন্ম : ৪ জানুয়ারি ১৯৫০। জয়নগরসরিষাবাড়িজামালপুর
ইংরেজি সাহিত্যে অনার্সইংরেজি বিভাগঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
এম.এ. ইংরেজি সাহিত্যঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
পোস্টগ্রাজুয়েট ডিপ্লোমালীডস বিশ্ববিদ্যালয়যুক্তরাজ্য
এম. এ. (ভাষাতত্ত্ব ও ধ্বনিতত্ত্ব)লীডস বিশ্ববিদ্যালয়যুক্তরাজ্য
পিএইচ. ডি. (ইংরেজি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
পেশা : অধ্যাপনাইংরেজি বিভাগঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৭৩ থেকে অদ্যাবধি)
উপাচার্য : জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়।
মৃত্যু : ১৬ জুন ২০১৩।

খোন্দকার আশরাফ হোসেন : তোমার নামে বৃষ্টি নামে


এহ্‌সান মাহ্‌মুদ

১৯৫০ থেকে ২০১৩, ক্যালেন্ডারের হিসেবে ৬৩ বছর। বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ুর হিসেবে একেবারেই উপেক্ষা করার মতো নয়। যে বয়সের কারো সামনে দাঁড়ালে বেশ সমীহ করে দাঁড়াতে হয়। বয়সের কারনে হোক আর অভিজ্ঞতার কারনেই হোক, মাথা নিচু হয়ে আসে তাঁদের সামনে দাঁড়ালে। বয়স আর অভিজ্ঞতা ছাড়াও আরো একটি কারনে কারো সামনে দাঁড়ালে মাথা নিচু হয়ে আসে, সেটি হলো বিনয়। কারো বিনয়ী আচরণ। তবে বয়স, অভিজ্ঞতা, বিনয় এই তিনটি গুণাবলী এক জীবনে একজন মানুষের চরিত্রে ধারন করাটা একটু দূরহ কাজই বটে। 

খোন্দকার আশরাফ হোসেনের প্রয়ানে ফেসবুকে শোক-লেখা


জাকির তালুকদার--
আমাদের ভাষার অত্যন্ত প্রয়োজনীয় কবি খোন্দকার আশরাফ হোসেন আজ মারা গেলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করেছেন। মাত্র কয়েকমাস আগে ত্রিশাল কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হয়েছিলেন। মুল পরিচয় কবি, এবং গুরুত্বপূর্ণ কবিতাপত্রিকা 'একবিংশ'-এর সম্পাদক। 
তাঁর সাথে আমার ঘনিষ্ঠতা বা সখ্য তেমন ছিল না। দেখা হলে শুভেচ্ছা বিনিময় করতাম। তাঁর পত্রিকায় আমি একটিমাত্র কবিতা লিখেছিলাম।

খোন্দকার আশরাফ হোসেনের সাক্ষাতকার--আমাদের সমাজটা আসলে বন্দি


খোন্দকার আশরাফ হোসেন (১৯৫০-২০১৩) কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক, অনুবাদক। তিনি ১৯৫০ সালের ৪ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। ছাত্রাবস্থাতেই তিনি লেখালেখির সংগে জড়িয়ে পড়েন। তাঁর এ যাবত প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ তিন রমণীর ক্বাসিদা, পার্থ তোমার তীব্র তীর, জীবনের সমান চুমুক, সুন্দরী ও ঘৃণার ঘুঙুর, জন্মবাউল, যমুনাপর্ব এবং আয়না দেখে অন্ধ মানুষ

কবিতা সম্পর্কে আমি আশাবাদী : কবি খোন্দকার আশরাফ হোসেন

সাক্ষাৎকার গ্রহণে--
আনিস আহমেদ
21.03.2013
জাতিসংঘের উদ্যোগে গোটা বিশ্বে আন্তর্জাতিক কবিতা দিবস উদযাপিত হলো একুশে মার্চ । আমাদের এই প্রাত্যহিক , প্রায় প্রাযৌক্তিক পৃথিবীতে কবিতার অপরিহার্যতাই বা কি ? এসব বিষয় নিয়ে , ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ও কবি ড খোন্দকার আশরাফ হোসেন কথা বলেছেন ভয়েস অফ আমেরিকার সঙ্গে। তিনি বলেন যে সাহিত্যের অধ্যাপক হওয়া এবং কবিতা  লেখার সৃজনশীলতার মধ্যে কোন বিরোধ নেই। তিনি মনে করেন যে ক্লাসরুমে কবিতা পড়ানোর বিষয়টি ঠিক কবিতার ব্যবচ্ছেদ নয় , কবিতা পাঠ । প্রসঙ্গত তিনি বেশ কয়েকজন কবির কথা উল্লেখ করেন , যারা  সৃজনশীলতার সঙ্গে কবিতা নিয়ে বিশ্লেষানত্মক নিবন্ধ লিখেছেন বিস্তর।  অতএব তাঁর এই পাঠদানের সঙ্গে তাঁর সৃজনশীল কর্মকান্ডের কোন বিরোধ বা দ্বন্দ্ব নেই বলে খোন্দকার আশরাফ মনে করেন।

তারুণ্যের খাপে চাই সতর্ক দু’টি ছুরি : খোন্দকার আশরাফ হোসেন



[ কবি খোন্দকার আশরাফ হোসেন আশির দশকের অন্যতম কবি। সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেছেন  ফারহান ইশরাক । লিঙ্ক ]

ইশরাক: প্রস্তুতিপর্বে, কবিতার পেয়ালায় ঢেলে দর্শনের যে নির্যাস আপনাকে পান করতে দেখি পরবর্তী পর্যায়ে তৃষ্ণার সে চুমুক থেকে মুখ ফিরিয়ে সমাজচেতনার আশ্রয়ে দাঁড়িয়ে আপনাকে বাজাতে শুনি সমকালীনতার শেষাত্মক বাঁশি, যদিও তা নন্দনের আবশ্যিক শর্তকে আদৌ ব্যাহত করে না। এর অন্তরালে  কাজ করেছে চেতনার কোন বিশেষ প্রতারক-খোলস পাল্টানো সমাজবিকৃতির অভিঘাত, নাকি মনস্তত্ত্বের স্বতঃস্ফূর্ত রূপান্তর?

খোন্দকার আশরাফ হোসেনের ১৫টি কবিতা








১৬ জুন খোন্দকার আশরাফ হোসেন ১৬ জুন চলে গেলেন না ফেরার দেশে। তাঁর লেখা নির্বাচিত ১৫টি কবিতা প্রকাশ করা হল। কবিতাগুলো তিনি বিভিন্ন সময়ে কুলদা রায়কে পাঠিয়েছিলেন। 

প্রার্থনায় নম্র হও পাবে

আমাকে পাবে না প্রেমেপ্রার্থনায় নম্র হও পাবে,
কামে-ঘামে আমি নেইপিপাসায় তপ্ত হও পাবে

পাখিরা প্রমত্ত হলে সঙ্গিনীকে ডেকে নেয় দেহের ছায়ায়-
ছায়া নয়রৌদ্রতাপ জ্বালাবার শক্তি ধরোকেবল আমাকে
তপ্তজলে দগ্ধ করোরুদ্ধ ক্রোধে দীপ্ত করোপাবে

পৃথিবীর সর্বশেষ কবি আমি অহঙ্কার আমার কবিতা
বিষাদে বিশ্বাসে পূর্ণ হৃদয়ের জলাধারে ধরো,
আমাতে নিবদ্ধ হও পূর্ণপ্রাণ ফলবন্ত হও-
আমাকে পাবে না ফলেপরাগ-নিষিক্ত হওপাবে