শুক্রবার, ৯ এপ্রিল, ২০১০

সাহিত্যের ছোট কাগজ একবিংশ-র ২৫ বছর পূর্তি: কালের ছাঁকনি অর্জন ও আকাঙ্ক্ষা : তুষার গায়েন

তুষার গায়েন

বহু দশকব্যাপী বাংলাদেশের সদা-অস্থির পরিবেশে প্রচলিত জনরুচির বিপরীতে দাঁড়িয়ে কোন লিটল ম্যাগাজিন/ সাহিত্য পত্রিকার ২৫ বছর আয়ুপ্রাপ্তি একটি সঞ্জীবনী ঘটনা। ‘একবিংশ’ সে ঘটনাসঞ্জাত পাত্র (পত্রিকা) — যার ভিতরে জলের ওঠানামা, ভরে উঠে সরে যাওয়া এবং আবারও প্লাবী হয়ে ওঠার আকুতিতে পূর্বাপর বন্ধু ও স্মৃতি অন্বেষণে দৃষ্টিসজল, দীর্ঘশ্বাসে ভরা।

আমি জানি, কোথাও কোনো কিছুকে ঘিরে এক বন্ধন রচিত হয়েছিল — ধুলোওড়া ফাল্গুনের বিকেলে সারি সারি বইয়ের অস্পষ্ট গুঞ্জন আর সতীর্থদের বুক-ধুকপুক করা সোনার হরিণ ধরার বৃত্তভেদী পদসঞ্চালন — গোল হয়ে বসে বহুক্ষণ আড্ডা, ধুমায়িত চা-পান-ধোঁয়া-সহযোগে, কবিতার খানাখন্দ খোঁজার পাশাপাশি এঁর-ওঁর মুণ্ডুপাত ও অদূরে প্রেসের শব্দ — লেখা দেওয়ার ডেডলাইন — তরুণতম কবি এলেন কাঁপা-কাঁপা হাতে সদ্যোজাত কবিতাটিকে প্রেসের শেষ ট্রেনে তুলে দিতে ... এইসব কিছু একবিংশ-কে ঘিরে আমার এখন মনে পড়ে। এখন এই শীতে, স্তরীভূত বরফের দেশে যেখানে বন্ধুসঙ্গ বিরল ও কবিসঙ্গ ততোধিক, ফেসবুকে অতঃপর লেপ্টে দিয়েছি নিজের মুখচ্ছবি — বহুজন অন্তর্জালে এসে ধরা দেয়, অধিকাংশ ভার্চুয়াল — স্মৃতি, শ্রুতি ও সঙ্গ-অতীত; তবু যাদের পাশাপাশি হেঁটেছি বহুদিন তাদের কেউ কেউ ভার্চুয়ালিটিকে ভেঙ্গে আসেন, দীর্ঘ বিচ্ছিন্নতার পর হঠাৎ ধরে ফেলার আনন্দ ও উত্তেজনায় বলেন: কী খবর? লেখালেখি? এমনই হ’ল অবশেষে কবি খোন্দকার আশরাফ হোসেনের সঙ্গে — বহু-গুণে-গুণান্বিত লেখক, অধ্যাপক, সমালোচক, অনুবাদক ও সর্বোপরি সম্পাদক। একবিংশ-র যতকথা তাঁকে সামনে রেখেই তো বলতে হবে, কারণ তিনিই তো সেই সফল ও ব্যর্থ পার্থ! মধ্য আশিতে দেশ থেকে সোভিয়েতে গিয়ে পড়াশুনা শেষ করেই ঐ (স্বপ্ন) দেশের ভাঙন অব্যবহিত বিস্ময় ও মর্মযাতনায় ভর করে দেশে ফিরে আসি অপ্রকাশিত কবিতার ভার লাঘব ও নতুন কবিতা সৃজনের তাগিদে। তখনো দেশের বিকল্প ধারার সাহিত্যচর্চা, লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলন ইত্যাকার বিষয়ের সঙ্গে অপরিচিত। কয়েকটি কবিতা জাতীয় দৈনিকের সাহিত্য পত্রিকায় মুদ্রিত হয়ে ঈষৎ উপশম বোধ হচ্ছে — এরই ভিতরে একদিন শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটে দেখি উজ্জ্বল ক্লীপের কামড়ে একটি পেরেকের গণ্ডদেশ থেকে এক সুদৃশ্য পত্রিকা ঝুলে আছে, প্রচ্ছদে ঘড়ির পেণ্ডুলামের মত দোলায়মান একটি হৃদয়কে নিয়ে মুখোমুখি দু’জন মানুষ দ্বৈরথে (পরে বুঝেছি দেশের সাহিত্য জগতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ওটা এক প্রতীক) — নাম একবিংশ। চমকে যাই, নামের ভিতরে এক দূরযাত্রার আকাঙ্ক্ষা — ঋদ্ধ কলেবরে কত তরুণ কবির কবিতা, বিদেশী কবিতার অনুবাদ, সাহিত্যতত্ত্ব বিষয়ক প্রবন্ধ, সমকালীন কবিতার আলোচনা-সমালোচনা বন্দী হয়ে আছে ঝকঝকে মুদ্রণ ও বাঁধাইয়ে — নেড়ে চেড়ে দেখি আর ভাবি এইতো আমার কবিতার কাগজ! পত্রিকার সম্পাদকের নাম দেখে পাঠ-স্মৃতি থেকে উদ্ধার করি খোন্দকার আশরাফ হোসেনকে — কলেজে থাকতেই যাঁর কবিতার বই ‘তিন রমণীর ক্বাসিদা’ পড়ে মুগ্ধ হয়েছিলাম। অতঃপর তার সঙ্গে দেখা করতে যাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে, যেখানে তাঁর নিজস্ব কক্ষ ও পত্রিকার সম্পাদকীয় যোগাযোগের ঠিকানা। ‘আমাকে তো আপনি চিনবেন না’ বলে আমার নাম ঘোষণা করি এবং মূহুর্তমাত্র বিলম্ব না করে তিনি আমাকে সনাক্ত করেন এবং বলেন যে আমার কবিতা তিনি দৈনিকের সাহিত্য পাতায় পড়েছেন। আমি কিছুটা বিস্মিত হই এবং ভাবি যে, আমার সদ্য প্রকাশিত মাত্র তিনটি কবিতা কী তাহলে একটি ত্রিভুজ রচনা করেছে! যেমন বাহ্যিক দর্শনে তিনি বিশিষ্ট সাধারণ বাঙালিদের তুলনায়, দীর্ঘকায় ও দূর থেকে সনাক্তযোগ্য চুলের গড়নে — তেমনি অন্তর্গত ও কিছুটা শ্লেষী স্বভাবের এই কবি-অধ্যাপকের সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠতা ক্রমেই বাড়তে থাকে। একে একে পরিচিত হই পত্রিকার কবি-লেখকদের সঙ্গে — খলিল মজিদ, দাউদ আল হাফিজ, রণক মুহম্মদ রফিক, আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ, কামরুল হাসান, বায়তুল্লাহ কাদেরীসহ অনেকের সঙ্গে, যাদের সাথে কেটেছে এরপর দীর্ঘকাল বন্ধুত্ব ও বিরোধিতায়, নিয়মিত দর্শন ও বহুকাল দর্শনহীনতায়। এটা ৯৩/৯৪ সালের কথা, যখন আমাদের সঙ্গে আড্ডায় আরও থাকতেন লেখক মফিজুল হক, কবি সুহিতা সুলতানা ও সমরেশ দেবনাথ।

প্রকৃতিগত কারণেই হোক অথবা জীবনের ভৌত ব্যবস্থাদি যথেষ্ট পরিমাণে নাগরিক ও সংহত না হয়ে ওঠার জন্যই হোক, বাঙালিদের ভেতর আবেগের পরিমাণ অনেক বেশি, বিশেষতঃ বাংলাদেশে, যা প্রধানতঃ গভীর ও অগভীর কাব্য রচনার মাধ্যমে চরিতার্থ হতে চায়। কবিতা রচনা করতে চাওয়ার ভেতর অগৌরবের কিছু নেই তা সে যতই সাধারণ্যে উপহাসের বিষয় হোক না কেন, কিন্তু মিডিয়া-প্রাবল্যের যুগে অনায়াস মুদ্রণের সুযোগ ও মেধাহীন অত্যুৎসাহীদের ভিড়ে এমন কবিতা পত্রিকার প্রয়োজন ছিল যা কিনা হবে কালের ছাঁকনি, যেখানে কবিতা সহজে ছাপা যায় না এবং ছাপা হওয়ার অর্থ কাব্য সম্ভাবনার এক রকম স্বীকৃতি — এমনই একটি মান একবিংশ-র অভীষ্ট ছিল এবং তা অর্জনও করেছে নিঃসন্দেহে। মধ্য আশিতে খোন্দকার আশরাফ যখন পত্রিকাটি প্রকাশ করেন তখন তিনি এমন ঘোষণাও করেছিলেন যে, একবিংশ হবে সৃজন আকাঙ্ক্ষায় ভরপুর, মেধাবী ও অপ্রতিষ্ঠিত তরুণদের আত্মপ্রকাশের পাটাতন, যেখানে মেধাহীন অথবা তথাকথিত প্রতিষ্ঠিত সূর্যের কোন স্থান নেই। হয়েও ছিল তাই, সত্তর-পরবর্তী বাংলাদেশের কবিতায় তরুণদের মধ্যে পরিবর্তনের যে আকাঙক্ষা প্রবল হয়ে উঠেছিল, তা যথেষ্ট উৎসাহ ও প্ররোচনা সংগ্রহ করে নিতে সক্ষম হয় বিশ্বব্যাপী আধুনিকতাবাদী দর্শন ও চিন্তাকাঠামো নতুন তাত্ত্বিক ও দার্শনিকদের দ্বারা ব্যাপকভাবে সমালোচিত এবং আক্রান্ত হওয়ায়। পোস্টকলোনিয়াল, পোস্টস্ট্রাকচারাল ও পোস্টমডার্ণ ডিসকোর্স তরুণদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে, বিশেষতঃ এসব বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গে চর্চার ঘণত্ব ও তার প্রভাব বাংলাদেশেও বিস্তৃত হয়। খোন্দকার আশরাফ নিজে কবি, ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক ও কৃতী অনুবাদক হওয়ায় বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন আধুনিকতাবাদী কাব্য আন্দোলনের সঙ্গে পাঠককে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন ও উপহার দিয়েছেন বিদেশী কবিতার ঝকঝকে অনুবাদ; পাশাপাশি নতুন হাওয়া বদলের খবরও রেখেছেন এবং যথাসম্ভব চেষ্টা করেছেন একবিংশ-এ তা ধারণ করতে। তাঁর বিশেষ কৃতিত্ব এই যে, তিনি তত্ত্বের পাগলা ঘোড়ায় চড়ে লাগাম হারাতে রাজী হননি বরং উত্তরাধুনিকতাবাদী তত্ত্বের আড়ালে ঘাপটি মেরে থাকা বুদ্ধিবৃত্তিক মৌলবাদীদের অকুণ্ঠ সমালোচনা ও বিরোধিতা করেছেন — সেটা তাঁর প্রবন্ধে, ক্ষুরধার সম্পাদকীয়তে এবং প্রকাশ্য মঞ্চে। যদিও উত্তরাধুনিকতা নিয়ে একবিংশ-র বিশেষ সংখ্যা, যেখানে তিনি এই চিন্তা পদ্ধতিকে ফিরে দেখতে চেয়েছেন বিশ্বব্যাপী এর তাত্ত্বিক কাঠামো এবং বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে এর চর্চার পরিপ্রেক্ষিতে, সেখানে তিনি আশ্চর্যজনকভাবে বাংলাদেশের উত্তরাধুনিকতাবাদী প্রকৃত কবি ও কর্মীদের ব্যাপারে নীরব থেকেছেন; তাদের কবিতা ও কর্মের মূল্যায়ন তো দূরের কথা, নামও উচ্চারণ করেননি — যাদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ একবিংশ-র নিয়মিত লেখক ও তাঁর সঙ্গী ছিল। তাঁর সাফল্য এই যে তিনি মেধাবী, সেক্যুলার ও সৃজনশীল একদল তরুণের সঙ্গ ও নিরঙ্কুশ সমর্থন পেয়েছেন যারা সৎ, নিলোর্ভ ও হঠাৎ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে অনাগ্রহী, যারা সাধ্যমত তাঁর পত্রিকায় লিখেছেন ও সেরা লেখাটিকেই দিয়েছেন একবিংশ-এ আর এই অপরাধে মিডিয়াসহ বহু সাহিত্যগোষ্ঠীর বিরাগভাজন ও ক্ষেত্রবিশেষে নিগৃহীত হয়েছেন। একবিংশ-সম্পাদকের ব্যর্থতা এইখানে যে, তিনি এই সব সপ্রতিভ ও আপোষহীন তরুণদের শক্তি ও প্রত্যাশাকে ব্যবহার করে একটি বড় সাহিত্য পরিসর নির্মাণ করতে পারেননি বা তেমন কিছু করা হয়তোবা তাঁর লক্ষ্য ছিল না। তিনি মেধা, মনন ও কর্মপ্রয়াসে যতটা প্রখর, হৃদয় ও ঔদার্যে ততটা নয়। তাঁর অন্তর্মুখিনতা, হিসেবী আবেগ ও কিছুটা শ্লেষী স্বভাবের কারণে অনেকেই তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেনি। অনেক তরুণ যারা সশ্রদ্ধ-মুগ্ধতায় তাঁর সঙ্গে সমান্তরালে পথ হাঁটার সংকল্প করে এসেছিলেন, তারা নীরবে দূরে সরে গেছেন। পত্রিকার বিন্যাসে খোন্দকার আশরাফ যতটা সুচারু, সাংগঠনিকভাবে ততটাই অনাসক্ত ও ভঙ্গুর। একবিংশ আশির দশকে প্রকাশিত হলেও নব্বই দশকেই তার মূল বিস্তার এবং এর প্রধান লেখক নব্বইয়ের কবিকূল। আশির দশকের খুব কম সংখ্যক কবিই যারা একবিংশ-এ লেখা শুরু করেছিলেন, তাদের ভেতর দু’একজন বাদে আর কেউ এ পত্রিকায় লেখা অব্যাহত রাখেননি। একবিংশ যে উজ্জ্বলতা, মেধা ও সৃষ্টিশীলতা নিয়ে আবির্ভূত হয়েছিল, তাতে এটাই হয়ত স্বাভাবিক হত যদি এই পত্রিকাটিকে কেন্দ্র করে জমে উঠত তরুণদের প্রাণবন্ত আড্ডা, বছরে আয়োজন করে অন্ততঃপক্ষে দু’একটি নিয়মিত কবিতা/সাহিত্যের অনুষ্ঠান যেখানে তরুণ কবিরা তাদের কবিতা পড়বেন, কবিতা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করবেন, বয়োজ্যেষ্ঠ কবিরা অংশ নেবেন তাতে অর্থাৎ কিনা গড়ে উঠবে একটা সার্বিক সেতু বন্ধন — একটা অর্গানিক সম্পর্ক — যেখানে শুধুমাত্র দু’মলাটের মধ্যে পড়ে থাকা নয় বরং উচ্চারণের গভীরতায় নতুন কবিতার মর্ম ও আবেদন পাঠকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার সুযোগ হবে যাতে বহুশ্রুত ও উচ্চারিত প্রচলিত কাব্যভাষার বিপরীতে নতুন উচ্চারণের আস্বাদ পাঠক পেতে পারেন। এইসব কিছু উজ্জীবিত ও প্রাণিত করতে পারত একবিংশকে ঘিরে আসা তরুণদের এবং যারা দূর থেকে সম্ভ্রমের দৃষ্টিতে এ পত্রিকাটিকে দেখেছেন ও ঘণিষ্ঠ হওয়ার পথ খুঁজেছেন। বিচ্ছিন্নভাবে দু’একটা অনুষ্ঠান যা কিনা একবিংশ আয়োজন করেছিল যেমন একবিংশ-র দশবছরপূর্তি অথবা সম্পাদকের পঞ্চাশতম জন্মদিন ইত্যাদি, তা যে হয়েছিল অনবদ্য ও প্রাণময় — তা কে অস্বীকার করবে? এ জাতীয় উদ্যোগের স্বল্পতা, সবাইকে উদার উষ্ণতায় কাছে টানতে না পারার ব্যর্থতা শুধু একবিংশ-র অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত, অনিয়মিত ও মন্থরই করেনি; খোন্দকার আশরাফের ব্যক্তিগত নিঃসঙ্গতাও বাড়িয়ে তুলেছে বহুগুনে। এইসব সাফল্য ও ব্যর্থতার খতিয়ান নিলে দেখা যাবে, একবিংশ-র সাফল্যের পরিমানই বেশী। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের কবিতায় বাকবদলের চিহ্ণগুলোকে ধারণ করে, দেশের প্রতিভাবান তরুণ কবিদের প্রায় অধিকাংশের কবিতা একবিংশ-র কোনো না কোনো সংখ্যা অথবা বহু সংখ্যায় মুদ্রিত করে তিনি একটি কাব্যরুচির প্রতিষ্ঠা করেছেন যা এই পত্রিকাটিকে সমকালে শ্রেষ্ঠ কবিতার কাগজ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে বলে আমার বিশ্বাস। সম্পাদক হিসেবে খোন্দকার আশরাফ কখনও কোনো তরুণ কবিকে বোঝাতে চেষ্টা করেননি যে কী ধরনের কবিতা লেখা শ্রেয় অথবা তাদের কবিতার শক্তি ও দূর্বলতা কোথায় এবং কিভাবেই বা তাকে উন্নীত করে নেওয়া যাবে — যেমনটা বুদ্ধদেব বসু, সিকান্দার আবু জাফর অথবা আহসান হাবীব করতেন বলে শুনেছি; তবুও তিনি সম্পাদক হিসাবে সমকালে কেন শ্রেষ্ঠ সে প্রশ্ন আসতেই পারে। এর উত্তর : খোন্দকারের রয়েছে বিশেষ কাব্যরুচি ও পাকা জহুরীর চোখ যিনি স্রোতের টানে ভেসে যাওয়া অনেক অবাঞ্ছিতের ভিড় থেকে সুন্দর ফুলটিকে সনাক্ত করে তুলে আনতে পারেন। কবিতা কী এবং কী নয় সেই উপলব্ধির গভীরতা এবং নিরন্তর সেই উপলব্ধিকে প্রকাশ করে যাওয়ার নিমোর্হ দৃঢ়তাই তাঁকে এবং একবিংশকে দিয়েছে এই আসন। সাম্প্রতিক কালে, বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যে বহু নান্দনিক ও মানসম্পন্ন লিটল ম্যাগাজিন বের হচ্ছে তার পিছনে একবিংশ কোন না কোনভাবে প্রেরণা হয়ে আছে।

আজ একবিংশ-র ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আমি সম্পাদক, সতীর্থ ও পাঠকদের জানাই আমার প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও আন্তরিক অভিনন্দন!

টরন্টো, কানাডা
১৩ জানুয়ারী, ২০১০

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন