সৌম্য সরকার
অনেক দেখিয়াছি
অনেক দেখেছি আমি-- বলতেই একটি তৃতীয় শক্তি এসে জেঁকে বসে
আমারে জিগাইল-- কী; কী দেখেছেন ভাই? হেক্টর বা মেঘনাদের পরাজয়?
নাকি একলব্যের কাটা বৃদ্ধাঙ্গুলি? অথবা ডাইডোর শোক! ‘ইকারুসের আকাশ’!
আমাকে অস্বীকার করতেই হলো: না রে ভাই, ওসব তো হোমারেরা দেখেছেন--
তবে তবে! ‘বিম্বিসার অশোকের ধূসর জগৎ’?
কিংবা ‘যেইখানে সবচেয়ে বেশি রূপ, সবচেয়ে গাঢ় বিষণœতা--’?
আমি আবার বললাম, না, জীবনদা দেখেছেন ওসব-- বহু পাখি, পাখনা, শকুন, কার্তিক,
পাখিহীন মেঘলা শহর, তারও আগে রূপসার ঘোলা জল, ধানসিড়ি,
খড়, মৃত্যুর আগে সুপারির সারি, ম্যালা, ম্যালা, ম্যালা কিছু...
আপনি তাহলে নিশ্চয়ই চীনের ওয়াল ডিঙানো হানদের দম্ভ দেখেছেন,
তাহারা নিশ্চিত; না হলে দ্রাবিঢ় প্রভাত? ইনকার রাত? চে-র সাইকেল? অথবা
‘বিধ্বস্ত নীলিমা’ কিংবা ‘কাঁচা দুধের ফেনার মত ভোরের সাদা আলো’ বা ‘গ্রাম্য মেয়ের অবাধ সাঁতার’?
পিনোশের পাঞ্চ? হিটলারের হিট! আমি আবারও বললাম, উঁহু, আমি বোধহয় ওসব দেখিনি;
এবার খেপে উঠলেন তাঁরা--কী দেখেছেন আপনি?
কীইবা দেখতে পারিস তুই--ঘোড়ার ডিম?
ধর্মের আঁশ, ঈশ্বরের ঔরস? প্রেমিকার নাভি?
ভাতহীন থালা? চটের বিছানা? অপরাজিতার মতো নীল
পলিথিনের ছাউনিÑ ফুটপাতে? পতিতার ভ্যানিটিব্যাগে রাখা হিরা কনডম?
কেউ একজন দূর থেকে বলে গেল ও আমার ড্যাশ দেখেছে! ...
আমি লজ্জিত হলাম। আমিতো সত্যিই অনেক দেখেছি।
তয় এসব কিছুই না,বা এসব সবই; না এইসব না মনে হয়।
আমি শুনলাম এক তরুণ কবি নাকি রাস্তার কুকুরকে (সম্ভবত
লোমহীন নেড়ি কুকুর) গণতন্ত্রের সনদ চাটতে দেখেছেন--হয়ত
বেশিদিন আগে দেখেননি। আমিও অনেক দেখেছি, তবে আমি গণতন্ত্রের কুকুরকে
কখনো রাস্তার কখনো প্রান্তরের, কখনো বৃক্ষের, কখনো ইতিহাসের
কখনো দর্শনের, সাহিত্যের ... অথবা প্রায়ই নারীর সম্ভ্রমের সনদ চাটতে দেখেছি--
সর্বোপরি আমি গণতন্ত্রের কুকুরকে মানুষের ভাগ্যের সনদ চাটতে দেখেছি।
অপেক্ষায় আছি
(বেকেটের ওয়েটিঙ ফর গডো প’ড়ে)
আমার খসে যাওয়া ডানা তুমি নিতে চাও, নাও না!
এদিকে অপেক্ষা করছি আমি গাভিন মেঘের মতো :
কখন ঝ’রে পড়া যায়--
মানুষের সাথে অনেকদিন হলো জমিয়ে কথা হয় না,
জমাতে পারি না; কীসব হাড়ভাঙা মিছিল--
তুলতে পারি না সময়ের ঘি; সেই ডানা কবেই ভেঙেছে...
কোনো এক ঈশ্বরের অপেক্ষায় ছিলাম কি?
এখনও বা আছি! আসবেন তিনি, আমাদের ‘চোদ্দগুষ্টি’
উদ্ধার করবেন এসে; এসে তিনি হয়ত বলবেন:
দাও, ঝাঁপ দাও ঐখানে; দাও কোপ দাও ঝোপ বুঝে,
মূর্খ! দৌড় দাও, দ্যাখো না তোমার সমাজের পিত্ত গ’লে
পিছলে যাচ্ছে সকাল, দ্যাখোতো তোমার অবাধ বৃক্ষে
কয়টি পাতার প্রয়াস, আসলো নাকি রাত আগামীকে উৎসর্গ ক’রে,
ঐতো তাকাও--উপসর্গ বৃষ্টির ...
মানুষের সাথে অনেকদিন হলো জমিয়ে কথা কওয়া হয় না,
ওরা ওদের মতো অন্ধের সাথে বাঁধা,
ওদের কাঁধে স্বপ্নের ঝুড়ি এখনও অটুট;
আমার একদম পাশেই যে, যাকে আমি আমার বুকপকেট
তন্ন-তন্ন ক’রে খুঁজে এনে দিই একটি শুটকো গাজর কিংবা টার্নিপ,
এখনও সে জানে না কী রঙ সন্ধ্যার--
জমে না কথার মিছিল
ডানা-ভাঙা আমার এ স্রোত আমি টানতে পারি না।
অনেক দেখিয়াছি
অনেক দেখেছি আমি-- বলতেই একটি তৃতীয় শক্তি এসে জেঁকে বসে
আমারে জিগাইল-- কী; কী দেখেছেন ভাই? হেক্টর বা মেঘনাদের পরাজয়?
নাকি একলব্যের কাটা বৃদ্ধাঙ্গুলি? অথবা ডাইডোর শোক! ‘ইকারুসের আকাশ’!
আমাকে অস্বীকার করতেই হলো: না রে ভাই, ওসব তো হোমারেরা দেখেছেন--
তবে তবে! ‘বিম্বিসার অশোকের ধূসর জগৎ’?
কিংবা ‘যেইখানে সবচেয়ে বেশি রূপ, সবচেয়ে গাঢ় বিষণœতা--’?
আমি আবার বললাম, না, জীবনদা দেখেছেন ওসব-- বহু পাখি, পাখনা, শকুন, কার্তিক,
পাখিহীন মেঘলা শহর, তারও আগে রূপসার ঘোলা জল, ধানসিড়ি,
খড়, মৃত্যুর আগে সুপারির সারি, ম্যালা, ম্যালা, ম্যালা কিছু...
আপনি তাহলে নিশ্চয়ই চীনের ওয়াল ডিঙানো হানদের দম্ভ দেখেছেন,
তাহারা নিশ্চিত; না হলে দ্রাবিঢ় প্রভাত? ইনকার রাত? চে-র সাইকেল? অথবা
‘বিধ্বস্ত নীলিমা’ কিংবা ‘কাঁচা দুধের ফেনার মত ভোরের সাদা আলো’ বা ‘গ্রাম্য মেয়ের অবাধ সাঁতার’?
পিনোশের পাঞ্চ? হিটলারের হিট! আমি আবারও বললাম, উঁহু, আমি বোধহয় ওসব দেখিনি;
এবার খেপে উঠলেন তাঁরা--কী দেখেছেন আপনি?
কীইবা দেখতে পারিস তুই--ঘোড়ার ডিম?
ধর্মের আঁশ, ঈশ্বরের ঔরস? প্রেমিকার নাভি?
ভাতহীন থালা? চটের বিছানা? অপরাজিতার মতো নীল
পলিথিনের ছাউনিÑ ফুটপাতে? পতিতার ভ্যানিটিব্যাগে রাখা হিরা কনডম?
কেউ একজন দূর থেকে বলে গেল ও আমার ড্যাশ দেখেছে! ...
আমি লজ্জিত হলাম। আমিতো সত্যিই অনেক দেখেছি।
তয় এসব কিছুই না,বা এসব সবই; না এইসব না মনে হয়।
আমি শুনলাম এক তরুণ কবি নাকি রাস্তার কুকুরকে (সম্ভবত
লোমহীন নেড়ি কুকুর) গণতন্ত্রের সনদ চাটতে দেখেছেন--হয়ত
বেশিদিন আগে দেখেননি। আমিও অনেক দেখেছি, তবে আমি গণতন্ত্রের কুকুরকে
কখনো রাস্তার কখনো প্রান্তরের, কখনো বৃক্ষের, কখনো ইতিহাসের
কখনো দর্শনের, সাহিত্যের ... অথবা প্রায়ই নারীর সম্ভ্রমের সনদ চাটতে দেখেছি--
সর্বোপরি আমি গণতন্ত্রের কুকুরকে মানুষের ভাগ্যের সনদ চাটতে দেখেছি।
অপেক্ষায় আছি
(বেকেটের ওয়েটিঙ ফর গডো প’ড়ে)
আমার খসে যাওয়া ডানা তুমি নিতে চাও, নাও না!
এদিকে অপেক্ষা করছি আমি গাভিন মেঘের মতো :
কখন ঝ’রে পড়া যায়--
মানুষের সাথে অনেকদিন হলো জমিয়ে কথা হয় না,
জমাতে পারি না; কীসব হাড়ভাঙা মিছিল--
তুলতে পারি না সময়ের ঘি; সেই ডানা কবেই ভেঙেছে...
কোনো এক ঈশ্বরের অপেক্ষায় ছিলাম কি?
এখনও বা আছি! আসবেন তিনি, আমাদের ‘চোদ্দগুষ্টি’
উদ্ধার করবেন এসে; এসে তিনি হয়ত বলবেন:
দাও, ঝাঁপ দাও ঐখানে; দাও কোপ দাও ঝোপ বুঝে,
মূর্খ! দৌড় দাও, দ্যাখো না তোমার সমাজের পিত্ত গ’লে
পিছলে যাচ্ছে সকাল, দ্যাখোতো তোমার অবাধ বৃক্ষে
কয়টি পাতার প্রয়াস, আসলো নাকি রাত আগামীকে উৎসর্গ ক’রে,
ঐতো তাকাও--উপসর্গ বৃষ্টির ...
মানুষের সাথে অনেকদিন হলো জমিয়ে কথা কওয়া হয় না,
ওরা ওদের মতো অন্ধের সাথে বাঁধা,
ওদের কাঁধে স্বপ্নের ঝুড়ি এখনও অটুট;
আমার একদম পাশেই যে, যাকে আমি আমার বুকপকেট
তন্ন-তন্ন ক’রে খুঁজে এনে দিই একটি শুটকো গাজর কিংবা টার্নিপ,
এখনও সে জানে না কী রঙ সন্ধ্যার--
জমে না কথার মিছিল
ডানা-ভাঙা আমার এ স্রোত আমি টানতে পারি না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন